যশোরের সবুজ বিপ্লবের প্রতিক জিয়া খাল আজ মৃত, হারাতে বসেছে চিহ্নটুকুও

- আপডেট সময় : ০৩:০৯:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫ ২৩৯ বার পড়া হয়েছে
হেলিকপ্টার এলো। তিনি হেলি কপ্টার থেকে নেমে এগিয়ে গেলেন খালের দিকে, সাথে সেনাবাহিনীর অনেক উচ্চ পদস্থ অফিসার। তার পরনে ছিল সামরিক পোষাক। হাতে ছিল ছড়ি। ছড়ি রেখে হাতে তুলে নিলেন কোদাল, কাটলেন মাটি। ১৯৭৬ সালের ১ লা নভেম্বর, যশোরের শার্শা উপজেলার বেতনা নদীর উলসী অংশে কোদাল হাতে মাটি কেটে যাচ্ছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম। আর সে দৃশ্য সাধারনের মাঝে এক অভুত পূর্ব প্রেরনা সঞ্চার করেছিল। সেদিন তিনি দীর্ঘ ১৬ মাইল পথ পায়ে হেটে সাধারন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে তিনি ব্যাখ্য করেছিলেন ভবিষ্যতে এই খালের উপকারের কথা। বুজাচ্ছিলেন এই খাল খনন হলে সামনে কি হবে। উপকার হয়েছিলো বটে, হয়েছিলো সবুজ বিপ্লবও, কিন্তু সেদিনের সেই উপকারভোগীরাই গিলে খেয়েছে সেদিনের সেই জিয়া খাল। আজ পুরোপুরি মৃত। মুছতে বসেছে চিহ্নটুকুও।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে খাল পাড়ের জমির মালিকরা খন্ড খন্ড করে বেড়ি বাধ দিয়ে মাছ চাষ করে খাই। পানি প্রবহারে কোন লেশটুকুও নাই। যদিও তথ্য বলছে তৎকালিন সময়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম জমির মালিকদের ক্ষতি পূরন দিয়ে জমি সরকারি খাতায় লিখে নিয়ে খাল খনন করেছিলেন।
জানা যায় ষাটের দশকের কৃষিতে যে সবুজ বিপ্লবের সূচনা হয় তার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো সেচ। এই সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সহজলভ্য এবং টেকসই করার জন্য জিয়াউর রহমান যুগান্তকারী ঐতিহাসিক কর্মসূূচি গ্রহণ করেন। এই জনপ্রিয় কর্মসূূচি হলো খাল খনন। শুকনো মওসুমে কৃষক যেন নদীনালা ও খালের পানি দিয়ে জমিতে প্রয়োজনীয় সেচের ব্যবস্থা করে ফসলের নিবিড়তা বাড়িয়ে এবং বর্ষা মওসুমে ফসলকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে খাদ্যে স্বয়ম্ভর করতে পারেন এই মূল লক্ষ্য নিয়ে তিনি খাল খনন কর্মসূূচি গ্রহণ করেন। সমগ্র দেশে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এই কর্মসূূচিতে জনগণের সাথে তিনি নিজেও অনেক জায়গায় অংশ নিয়েছেন।
দেড় বছরে সারা দেশে এক হাজার পাঁচ শতাধিক খাল খনন ও পুনর্খনন করেন। ফলে দেশ স্বল্প সময়ের মধ্যেই খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে।
উলসী এলাকার শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন উলাশী এবং রঘুনাথপুর বাগ গ্রামের মাঝদিয়ে বয়ে গেছে উলাশীর বেতনা নদী, একসময় উলাশীর বেতনা নদীতে সারাবছর প্রচুর পরিমান পানি থাকে এবং প্রাকৃতিক মাছ পাওয়া যেতো।
উলাশীর উল্লেখ যোগ্য খালের মধ্যে জিয়ার খাল অন্যতম যেটি উলাশী এবং রঘুনাথপুর গ্রামের মুখ থেকে শুরু করে যদুন্থাপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রবাহিত হচ্ছে। উলাশীল এ খাল কাটার পিছনে উল্লেখযোগ্য অবদান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের।
শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, বেতনা নদীয় মরে গেছে তা আবার খাল, তিনি বলেন এই খালটি এই অঞ্চলের কৃষি কাজের জন্য অন্নÍ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাধররা খালটি দখল করে মাছ চাষ করে। আর যার কারনে খালটি আর জনগনের সম্পত্তি থাকে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী নাজিব হাসান বলেন, আমি কালই উলসি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং নায়েবকে ডেকে খাল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করবো।