যশোর ডিবির আরও একটি বড় সাফল্য, সিনেমাটিক অভিযানে আটক ১৪

- আপডেট সময় : ০২:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১২৮ বার পড়া হয়েছে
যশোর উপশহরে গোলেন্ড বাইক শো-রুমে ডাকাতিতে জড়িত ১৪ জনকে গ্রেফতার করে চমক দেখালো যশোর ডিবি পুলিশ। তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি কাটার একটি দা, সেলাই রেঞ্জ, ২টি গ্রান্ডিং মেশিন, ১টি সাদা পিক আপ, কালো তার, রড ও ২টি ওয়েলন্ডিং মেশিন পাওয়া গেছে। এছাড়া লুটের নতুন ও পুরাতন মিলে ৬৭টি ব্যাটারি, অক্সিজেন সিলিন্ডার ৪৪টি, মিনি ট্রাক ভর্তি গ্যাস সিলিন্ডার ১১০টি ও ৩টি টায়ার উদ্ধার হয়েছে। এটি যশোর ডিবির বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন সচেতন মহল।

আটককৃতরা হলেন-মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মুন্সিকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ মোল্লার ছেলে আলমগীর হোসেন (৫৯), মুন্সিগঞ্জ জেলার রংনেহার গ্রামের রহিম হোসেনের ছেলে ১৮টি মামলার আসামি হিরা রহমান ওরফে বিজয় হোসেন (২৬), দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া গ্রামের দুদু মোল্লার ছেলে ৫টি মামলার আসামি রবিন মোল্লা (৩০), একই জেলার চকেরপাড়া গ্রামের সামছু মিয়ার ছেলে ৮টি মামলার আসামি নজরুল ইসলাম (৫০), একই জেলার ইসলামপুর গ্রামের মৃত হাসেম আলীর ছেলে ৪টি মামলার আসামি মোঃ আমির হোসেন(৫৮), মুন্সিগঞ্জ জেলার কাশিমপুর গ্রামের মৃত মকুলের ছেলে জাহিদ (৩০), নরিসংদীর আউয়ালীকান্দি গ্রামের সাদেকের ছেলে ১০টি মামলার আসামি মোঃ রাকিব (২৬), নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার পাগলা গ্রামের মৃত জাকিরের ছেলে দুটি মামলার আসামি সোহেল(৩২), মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি গ্রামের মোফাজ্জল শেখের ছেলে মোঃ আলগমীর শেখ (৪০), শরিয়াতপুর জেলার কোটাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মোঃ ইউনুছ(৩৮), মুন্সিগঞ্জ জেলার নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে বাবলু রহমান ওরেফে বাবু(৩৫), নোয়াখালীর মতিপুর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে নিজাম উদ্দিন (৪২), মাদারীপুরের কাপালীকান্দি গ্রামের মৃত তোরাব আলীর ছেলে জুয়েল মাতুব্বর (৪০) ও ঢাকার মুগদা উপজেলার মৃত শুকুর খানের ছেলে আব্দুল কাদের (৩২)।

উপশহরে গোল্ডেন বাইকের শো-রুমে নাইট গার্ডকে বেঁধে ডাকাতির ঘটনা ঘটে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে। ডাকাতদল পিকআপে করে লুটের মালামাল নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা হয়, যার নং-১, তাং-০১/০২/২০২৫খ্রিঃ, ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড রুজু হয়।
বিষয়টি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় তৎসময়ের পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযানে নামে যশোর ডিবি পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি’র এসআই রাজেশ কুমার দাশ, এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজিব, এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন, এসআই বিপ্লব সরকার ও কনস্টেবল আব্দুল বাতেনসহ একদল চৌকষ ফোর্স তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সোর্স ব্যবহার করে ডাকাত সদস্যদের সনাক্ত করে ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযান শুরু করেন।
সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি পদ্মা সেতুর সেতুর টোল প্লাজার ব্যারিকেড দিয়ে ডাকাতি করে ফেলার দলটিকে আটকের চেষ্টা করেন ডিবির সদস্যরা। এ সময় তারা ব্যারিকেড ভেঙে পালিয়ে যায়। ডিবি পুলিশ তাদের পিছু নেয়। এ সময় পিকআপ থেকে গ্যাস সিলিন্ডার ছুড়ে মারে ডিবির গাড়িতে। কিন্তু পুলিশের চৌকষ ফোর্স তাদের গ্রেফতারে মরিয়া হয়ে ছুটতে থাকে। এক পর্যায়ে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত পার হয়ে আসামিরা এক্সপ্রেস ওয়ের ফাঁকা জায়গায় গ্যাস সিলিন্ডারসহ মিনি ট্রাকটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। সেই থেকে অভিযান চলতে থাকে ডিবির। এক পর্যায়ে শিবচরের আলমগীরকে কাটার ও দড়িসহ আটক করতে সমর্থ হয় ডিবি পুলিশ। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর উপশহরে বাইকের শো-রুমে ডাকাতিসহ আরও কয়েকটি লুট ও ঘটনায় জড়িতদের নাম প্রকাশ করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের জালে একে একে ধরা পড়েন ১৪ ডাকাত।
সর্বশেষ ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার খিলগাঁও থানা এলাকার চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয়কারী আসামি আব্দুল কাদের (৩২) কে আটক করে ডিবি পুলিশ। তার হেফাজত থেকে ২৬টি চোরাই অক্সিজেন সিলিন্ডার উদ্ধার হয়েছে।
আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যশোর পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) নুর ই আলম সিদ্দিকী। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল বাশারসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।