যশোর ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পলিথিনের বিকল্প পাট জাতীয় পণ্য তৈরীতে ঝুঁকছেন যশোরের নারীরা

রাহাত আলী,মনিরামপুর(যশোর)প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ০৩:২৬:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে
যশোর নিউজের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 –

“দিনমজুর বাবার সন্তান মারুফা খাতুন।ছোট তিন বোনসহ ৫ জনের
সংসার চালাতে বাবার অনেক কষ্ট হয়।অভাবের সংসারে বাবার কাঁধে
বোঝা হতে চান না মারুফা।তাই পড়ালেখার পাশাপাশি পাট জাতীয় পণ্য
তৈরীর কাজ করে উপার্জিত স্বল্প রোজগার বাবার সংসারে অবদান
রাখছেন।” অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরিবেশের ক্ষতিক্ষারক পলিথিন
ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন সংশ্লিষ্ট পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন
মন্ত্রণালয়। এতে আরও আত্মবিশ্বাস ও উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে মারুফা
খাতুনের। তারমতো আরও কয়েকজন নারী রীতা দত্তের “অপরূপা হস্তশিল্পে”
পাট জাতীয় পণ্য সামগ্রিসহ সুতোয় তৈরী হস্তশিল্পের উপর প্রশিক্ষণ
নিচ্ছেন। তপ্রশিক্ষন নিচ্ছেন গৃহিনী খাদিজা বেগম, মাছুমা
খাতুনসহ কয়েকজন নারী । স্বামীর স্বল্প আয়ের সংসারে সহযোগিতা
করতে পাট জাতীয় পন্য সামগ্রী তৈরীর কাজে এসেছেন।যশোরের
মনিরামপুর উপজেলার রীতা দত্ত নামে এক নারী উদ্যোক্তা পাট জাতীয় পণ্য
সামগ্রি তৈরীর উপর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তিনি গড়ে
তুলেছেন “অপরূপা বহুমূখী মহিলা ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা”্ধসঢ়;রীতা দত্ত
এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক। সংগ্রামী ও প্রবল আত্মবিশ্বসী
নারী এই রীতা দত্ত গ্রামীন নারীদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি
করছেন।এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন বলেন,পণ্যে পাটজাত মোড়কের
ব্যবহার আইন-২০১০,পাট আইন-২০১৭-এ ধান,চাল,হলুদ,মরিচসহ এ
ধরনের পণ্য সামগ্রি পাট জাতীয় পণ্যে মোড়কজাত বাধ্যতামূলক করা
হয়েছে। এই আইনটি প্রয়োগ করলেই পলিথিনের ব্যবহার থাকবে
না।উদ্যোক্তা রীতা দত্ত বলেন, পরিবেশের ক্ষতিক্ষারক পলিথিনের বিকল্প হতে
পারে পাট জাতীয় এসব পণ্য। এজন্য দরকার সরকারের কার্য্যকরী উদ্যোগ ও
ভূমিকা। পাটের সুতোর মূল্য নাগালের মধ্যে রেখে দেশীয় বাজারে সহজ
বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে পলিথিনের দৌরত্ম কমে আসবে। দেশে পাট
জাতীয় পণ্যের বাজার সৃষ্টি হলে অনেক নারী এ পেশায় এগিয়ে আসবে।
এজন্য সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগে নারীদের কার্যকরী উন্নতর
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার প্রয়োজন।
মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক
বিদ্যুৎ রায় বলেন, প্রতিদিন যে পরিমান পলিথিন ব্যবহার হয়, তাতে
অর্থের অপচয়। কারন এটি কেবল একবারই ব্যবহার হয়। অথচ একটা পাটের
তৈরী ব্যাগ একশ’ টাকায় কিনে অনায়েশে তিন থেকে চার বছর ব্যবহার
করা যায়। শুধু বাজার করা ব্যাগ হিসেবে নয়, কাপড় রাখা থেকে শুরু করে
সাংসারিক সব ধরনের কাজ এই পাট জাতীয় পণ্যে সম্ভব।শিক্ষানবিশ
কর্মী খাদিজা পারভীন বলেন, সকাল ৯টা হতে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রশিক্ষন
নিয়ে নতুন পণ্য তৈরী করি। এতে উপার্জিত স্বল্প রোজগার সংসারের
কাজে লাগায়। মারুফা খাতুন বলেন, সংসারে তার আরও তিন বোন
রয়েছে। বাবার একার রোজগারে সংসার চলে না। এখান হতে উপার্জিত
স্বল্প রোজগার বাবার সংসারে সহযোগিতা করি।পাট অধিদপ্তর
মনিরামপুরে উপজেলায় দায়িত্বরত সোহানুর রহমান বলেন, রীতা দত্তই
একমাত্র পাট জাতীয় পণ্যের উপর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আমরা
পাট জাতীয় পণ্য তৈরীতে প্রশিক্ষণ দিয়ে পলিথিনের বিকল্প বাজার সৃষ্টির
চেষ্টা করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

পলিথিনের বিকল্প পাট জাতীয় পণ্য তৈরীতে ঝুঁকছেন যশোরের নারীরা

আপডেট সময় : ০৩:২৬:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

 –

“দিনমজুর বাবার সন্তান মারুফা খাতুন।ছোট তিন বোনসহ ৫ জনের
সংসার চালাতে বাবার অনেক কষ্ট হয়।অভাবের সংসারে বাবার কাঁধে
বোঝা হতে চান না মারুফা।তাই পড়ালেখার পাশাপাশি পাট জাতীয় পণ্য
তৈরীর কাজ করে উপার্জিত স্বল্প রোজগার বাবার সংসারে অবদান
রাখছেন।” অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরিবেশের ক্ষতিক্ষারক পলিথিন
ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন সংশ্লিষ্ট পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন
মন্ত্রণালয়। এতে আরও আত্মবিশ্বাস ও উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে মারুফা
খাতুনের। তারমতো আরও কয়েকজন নারী রীতা দত্তের “অপরূপা হস্তশিল্পে”
পাট জাতীয় পণ্য সামগ্রিসহ সুতোয় তৈরী হস্তশিল্পের উপর প্রশিক্ষণ
নিচ্ছেন। তপ্রশিক্ষন নিচ্ছেন গৃহিনী খাদিজা বেগম, মাছুমা
খাতুনসহ কয়েকজন নারী । স্বামীর স্বল্প আয়ের সংসারে সহযোগিতা
করতে পাট জাতীয় পন্য সামগ্রী তৈরীর কাজে এসেছেন।যশোরের
মনিরামপুর উপজেলার রীতা দত্ত নামে এক নারী উদ্যোক্তা পাট জাতীয় পণ্য
সামগ্রি তৈরীর উপর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তিনি গড়ে
তুলেছেন “অপরূপা বহুমূখী মহিলা ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা”্ধসঢ়;রীতা দত্ত
এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক। সংগ্রামী ও প্রবল আত্মবিশ্বসী
নারী এই রীতা দত্ত গ্রামীন নারীদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি
করছেন।এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন বলেন,পণ্যে পাটজাত মোড়কের
ব্যবহার আইন-২০১০,পাট আইন-২০১৭-এ ধান,চাল,হলুদ,মরিচসহ এ
ধরনের পণ্য সামগ্রি পাট জাতীয় পণ্যে মোড়কজাত বাধ্যতামূলক করা
হয়েছে। এই আইনটি প্রয়োগ করলেই পলিথিনের ব্যবহার থাকবে
না।উদ্যোক্তা রীতা দত্ত বলেন, পরিবেশের ক্ষতিক্ষারক পলিথিনের বিকল্প হতে
পারে পাট জাতীয় এসব পণ্য। এজন্য দরকার সরকারের কার্য্যকরী উদ্যোগ ও
ভূমিকা। পাটের সুতোর মূল্য নাগালের মধ্যে রেখে দেশীয় বাজারে সহজ
বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে পলিথিনের দৌরত্ম কমে আসবে। দেশে পাট
জাতীয় পণ্যের বাজার সৃষ্টি হলে অনেক নারী এ পেশায় এগিয়ে আসবে।
এজন্য সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগে নারীদের কার্যকরী উন্নতর
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার প্রয়োজন।
মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক
বিদ্যুৎ রায় বলেন, প্রতিদিন যে পরিমান পলিথিন ব্যবহার হয়, তাতে
অর্থের অপচয়। কারন এটি কেবল একবারই ব্যবহার হয়। অথচ একটা পাটের
তৈরী ব্যাগ একশ’ টাকায় কিনে অনায়েশে তিন থেকে চার বছর ব্যবহার
করা যায়। শুধু বাজার করা ব্যাগ হিসেবে নয়, কাপড় রাখা থেকে শুরু করে
সাংসারিক সব ধরনের কাজ এই পাট জাতীয় পণ্যে সম্ভব।শিক্ষানবিশ
কর্মী খাদিজা পারভীন বলেন, সকাল ৯টা হতে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রশিক্ষন
নিয়ে নতুন পণ্য তৈরী করি। এতে উপার্জিত স্বল্প রোজগার সংসারের
কাজে লাগায়। মারুফা খাতুন বলেন, সংসারে তার আরও তিন বোন
রয়েছে। বাবার একার রোজগারে সংসার চলে না। এখান হতে উপার্জিত
স্বল্প রোজগার বাবার সংসারে সহযোগিতা করি।পাট অধিদপ্তর
মনিরামপুরে উপজেলায় দায়িত্বরত সোহানুর রহমান বলেন, রীতা দত্তই
একমাত্র পাট জাতীয় পণ্যের উপর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আমরা
পাট জাতীয় পণ্য তৈরীতে প্রশিক্ষণ দিয়ে পলিথিনের বিকল্প বাজার সৃষ্টির
চেষ্টা করছি।